হৃদয় ভাই গত ক্লাসে অন পেইজ এসইও নিয়ে বিস্তারিত তাত্ত্বিক আলোচনা করেছিলেন। আমিও সেই ক্লাস নিয়ে গ্রুপে লিখেছিলাম। যদি সেই লেখাটি না পড়ে থাকেন তবে আগে সেটি পড়ে আসুন। তা না হলে এটি বুঝতে কঠিন হবে। কারন আজকের ক্লাসে হৃদয় ভাই প্র্যাকটিকেল করে দেখিয়েছেন।

আজকের আলোচনার বিষয় হলো, ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের On Page SEO fix করা বা set করার নিয়মসমূহ। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

আমাদের অন পেইজ এসইও করার জন্য ক্লায়েন্টের একটা ওয়েবসাইট লাগবে। ক্লায়েন্ট তার ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পাচ্ছে না বা গুগলে রেংক হচ্ছে না এরকম সমস্যা নিয়েই আমাদের কাছে আসবে। এখন আপনাদের মনে নিশ্চয় প্রশ্ন আসছে যে, ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইটটা নতুন হবে নাকি পুরাতন, আমাকেই কনটেন্ট আপলোড করতে হবে কি না ইত্যাদি।

হৃদয় ভাই বলেছেন, ক্লায়েন্ট ৩ ধরনের কাজ দিতে পারে।

  1. সাইটে অলরেডি কনটেন্ট আছে। এখন শুধু অন পেইজ ফিক্স করতে হবে।
  2. সাইটটা একদম নতুন। আমাকেই কনটেন্ট লিখে সেটা আবার এসইও করে পাবলিশ করে দিতে হবে।
  3. সাইটে Rank Math or Yoast SEO install করা নেই। আমাদেরকেই সেটা ইনস্টল করে এসইও করতে হবে।

উপরের ৩টি ধরন দেখে এতক্ষণে নিশ্চয় একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে। সেটি হলো, আমরাতো এসইও নিয়ে কাজ করছি। কনটেন্ট রাইটিং কিভাবে করবো?

হ্যাঁ, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কারন Content is king. তাই কনটেন্টকে হাই কোয়ালিটি হতে হবে। তাই আমরা যদি না পারি তবে এই ঝামেলায় যাব না। বরং এমন একজন কনটেন্ট রাইটারকে খুঁজে বের করব যে ভালো কনটেন্ট লিখে কিন্তু ঠিক মতো কাজ পায় না। এতে দুইজনেই উপকৃত হব।

ক্লায়েন্ট আমাদেরকে Targeted Keyword দিয়ে দিবে। সেই সাথে আনুসঙ্গীক তথ্যও দিবে। বাকীসব অর্থাৎ, Headline, content length, image সব কিছু আমাদেরকে করতে হবে। ক্লায়েন্ট যেসব সাজেশন দিবে সেগুলো মেনে কাজ করতে হবে।

এবার চলুন হৃদয় ভাইয়ের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু ডাটা দেখে নেই।

  • সাধারনত ৬০-৭০% সময় ক্লায়েন্ট কনটেন্ট দিয়ে দেয়।
  • ৮০% কাজ আসবে অলরেডি পাবলিশ করা কনটেন্টের অন পেইজ করার জন্য।
  • ২০% এর মতো নতুন ওয়েবসাইট থাকে।

আজকের ক্লাসে প্র্যাকটিসের জন্য কিওয়ার্ড ধরা হলো “Best SEO Service" এবং Targeted Location "Bangladesh". এবার এটার ওপর ভিত্তি করেই সব কাজ করতে হবে।

গত ক্লাসের লার্ণিংগুলো মনে আছেতো? এবার গত ক্লাসে শেখা নিয়মগুলো এপ্লাই করা শুরু করি। কেমন?

১. URL

কিওয়ার্ডটি ইউআরএলে রাখতে হবে। যেমন, ‍abc .com/best-seo-service

২. Title

টাইটেলে সুন্দর ভাবে কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। Best SEO Service in Bangladesh.

৩. Meta Description

কনটেন্টের শুরুর ১৬০-১৭০ ক্যারেক্টারের মধ্যে কিওয়ার্ডটি রাখতে হবে। কারন গুগল বর্তমানে আলাদাভাবে মেটা ডেসক্রিপশন গ্রহণ করছে না। কনটেন্টের শুরু থেকে নিয়ে নিচ্ছে।

এই তিনটি কাজ হচ্ছে একেবারে আবশ্যকীয় কাজ। এই তিনটি কাজ ঠিকমতো করতে পারলে যা হবে,

  • ক্রলার ক্রল করার সময় URL, Title, Meta description এ টার্গেটেড কিওয়ার্ড পাবে।
  • সে পুনারায় কনটেন্টের শুরুতেও কিওয়ার্ড পাবে।

এর ফলে গুগল এটাকে রেংক দেয়ার সম্ভাবন অনেক বেড়ে যাবে।

Tips: পুরো ব্যাপারটা ন্যাচারালি করবেন। গুগলকে ফোর্স করতে যাবেন না।

৪. কনটেন্টে কিওয়ার্ডের ব্যবহার

এবার কনটেন্টে টার্গেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। এটি প্রতি ১০০০ শব্দের জন্য ৫ বার হলে সবচেয়ে ভালো।

কারন যেসব সাইট কিওয়ার্ড স্টাফিং (কিওয়ার্ডের অতিরিক্ত ব্যবহার) করে গুগল তাদের পাত্তা দেয় না।

গুগল সেই কনটেন্টগুলোকে পছন্দ করে যেগুলো,

  • informative
  • unique
  • natural

আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, একটা পেজ অনেকগুলো কিওয়ার্ডের জন্য রেংক করতে পারে। তবে টার্গেটেড কিওয়ার্ড ১ টিই হয়।

৬. Heading Tag

একটা কনটেন্টে H1 tag একবারই ব্যবহার করা যায় সেটা হলো টাইটেলে। বাকী ৫টি ট্যাগ দ্বারা কনটেন্টকে গুছিয়ে উপস্থাপন করতে হয়।

এই ট্যাগগুলোতে মেইন কিওয়ার্ড এবং রিলেভেন্ট কিওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করতে হবে।

এইতো। এগুলোই হচ্ছে অন পেইজ এসইও-এর কাজ কারবার। কেমন লাগলো? কঠিন নাকি সহজ?

নিশ্চয় সহজই লেগেছে। আরেকটা মজার তথ্য দেই। ক্লায়েন্ট যেই ধরনের কনটেন্ট দেয় তাতে ৮০% কাজ এমনিই করা থাকে। বাকী ২০% আপনাকে করতে হবে। কারন যিনি কনটেন্ট লিখেছেন তিনিও একজন এসইও ফ্রেন্ডলী কনটেন্ট রাইটার।

ক্লায়েন্টের সাইটে কিভাবে কাজ করবেন?

এতকিছু বুঝার পর এবিষয়ে নিশ্চয় কৌতুহল জেগেছে। চলুন এটাও জেনে আসি।

ক্লায়েন্টের সাথে ডিল হওয়ার পর আপনাকে তার ওয়েবসাইটের এক্সেস চাইতে হবে। এটা করতে হবে প্রফেশনাল ভাষায়। যেমন, "Would you please give me your website URL?"

তারপর ক্লায়েন্ট সাইট লিংক দিয়ে দিলে আপনাকে ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করতে হবে। এজন্য সাইট লিংক এর পর স্ল্যাশ দিয়ে wp-admin লিখতে হবে (ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের ক্ষেত্রে)। যেমন, ‍site .com/wp-admin

সাইটের এক্সেসতো নিয়ে নিলেন। কাজ করতে হবে না?

কিভাবে কাজ করতে চান? ম্যানুয়ালি না প্লাগিনের সাহায্যে?

ম্যানুয়ালি এসইও করলে অনেক কষ্ট হবে। তাই এই কাজকে সহজ করার জন্য Rank Math নামের একটি প্লাগিন আছে। অর্থাৎ, মোবাইলে বিভিন্ন কাজ করার জন্য যেরকম App আছে তেমনি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কাজ করার জন্য Plugin আছে।

Rank Math হলো তেমনি একটি প্লাগিন। এটি দিয়ে সহজে কনটেন্টের এসইও পারফর্মেন্স দেখা যায়। এসইও রেটিং অনুযায়ী এটি নাম্বার দেয়। যদি ৮০ এর বেশি নাম্বার তুলতে পারেন তবে সেই কনটেন্টটির এসইও পারফর্মেন্স খুবই ভালো।

এছাড়াও Yoast SEO নামে আরেকটি প্লাগিন রয়েছে। হৃদয় ভাইয়ের মতে Rank Math টাই আপডেটেড এবং বেস্ট।

আজকের ক্লাসটি মূলত প্র্যাকটিকেল ক্লাস ছিল। অন পেইজ এসইও এর কাজগুলো প্র্যাকটিকেলি দেখানো হয়েছে।

তাই এই ক্লাসের ভিডিওটি ইউটিউব থেকে দেখে নিন। তাহলে পুরো বিষয়টি মাথায় গেঁথে যাবে।