কিছুদিন আগেও আমরা ফেসবুকে পোস্ট পড়া, লাইক-কমেন্ট করা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আমি বাটন ফোন দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার শুরু করেছিলাম। তখন ফেসবুকে বড় বড় গল্প, পর্ব গল্প পড়ার স্বর্ণযুগ ছিল। তাই পড়তামও প্রচুর।

তখন গল্পের পেজগুলোর তুমুল জনপ্রিয়তা ছিল। এখনও আছে। তবে সেই জায়গা অনেকটা দখল করে নিচ্ছে রিলস এবং Meme পেজগুলো।

তারপর ফেসবুকে আস্তে আস্তে F-commerce জনপ্রিয় হওয়া শুরু করলো। করোনা এসে এটাকে একটা শেইপে দিয়ে গেছে।

তারপর টিকটকের সাথে পাল্লা দিতে চালু হলো রিলস। এটিই সবচেয়ে বেশি সময়খেকো। এমনকি এসব শর্ট ভিডিও দেখার ফলে মানুষের মনযোগ দেয়ার ক্ষমতা কমে মাত্র ৮ সেকেন্ডে চলে এসেছে। এমনকি জেলি ফিশও আমাদের চেয়ে ১ সেকেন্ড এগিয়ে আছে।

এগুলোতো আমাদের দেশীয় অবস্থার কথা বললাম। কিন্তু যার খেলার মাঠে এত ভালো খেলাধুলা হচ্ছে, সে কি চুপচাপ বসে আছে?

নিশ্চয় না। কিন্তু কে সে?

হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। সে হচ্ছে স্বয়ং ফেসবুক। পেছনে অবশ্য মার্ক জাকারবার্গও আছে!

তারা এতদিনের বিনিয়োগ উঠিয়ে নেয়ার দিকে মনযোগ দিয়েছে। পেজগুলো থেকে পোস্টের রীচ বলতে গেলে গাযেব করে দিয়েছে।

সেই সাথে তারা পুরো সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ে আরেকটি জগতে শিফট হচ্ছে। না না মঙ্গল গ্রহের কথা বলছি না। 

এটা আপনি ১০ সেকেন্ড ভেবে বলুনতো। আচ্ছা হিন্টস দিচ্ছি। আপনি সেই জগতের কথা অনেকবার শুনেছেন। এমনকি আপনি কৌতুহলীও বটে।

ওকে। আমিই বলছি। সেটি হচ্ছে Metaverse!


Metaverse


Meta + Universe = Metaverse.

কি নেই এখানে? স্যোশাল মিডিয়া, মেসেজিং, অডিও-ভিডিও কল থেকে শুরু করে সবই আছে। Facebook, Messenger, Instagram, WhatsApp আছে Meta-এর অধীনে। সাথে আরেকটা কোম্পানি আছে। সেটি একটু ভিন্ন ধারার।

সেটি হচ্ছে Oculus. এটি মূলত Virtual Reality (VR) হেডসেট ও গিয়ার নিয়ে কাজ করে। এখনো গেমিং হেডসেটে থাকলেও তারা মূলত মেটাভার্সের জন্য উপযোগী গিয়ারগুলো তৈরিতে মনোনিবেশ করেছে।

ভার্চুয়াল মিটিং, আড্ডা, ট্রেনিং এসব বিষয়ে আমাদেরকে Seamless Experience দেওয়ার সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, Meta তাদের সব রিসোর্স কাজে লাগাচ্ছে Metaverse তৈরির জন্য। 

Facebook, Google-এর মতো প্লাটফর্ম আসার পর পুরো পৃথিবীর প্রতিটা সেক্টরে প্রভাব পড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে নেগেটিভ প্রভাব পড়লেও সবকিছু আগের চেয়ে বেটার হয়েছে। তাই না?

বলা হয় যে, Facebook আমাদেরকে যতটা চেনে ও জানে আমরা নিজেরাও নিজেদের সমন্ধে ততটা জানি না। 

সুতরাং এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন Metaverse নিয়ে আমাদের সিরিয়াসলি ভাবা উচিত। এটার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। অন্তত বেসিক বিষয়গুলোও সময়ের সাথে সাথে জেনে নিতে হবে।

ফেসবুক, গুগল আসার পর যেরকম বিজনেস, মার্কেটিং, লেখাপড়া, ভলান্টিয়ারিং, এক্টিভিজম, সংবাদ মাধ্যম ইত্যাদি সবকিছুর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াতে হিউজ চেঞ্জ এসেছিল, মেটাভার্স আসার পর ঠিক সেরকমই আরেকটা চেঞ্জ আসতে যাচ্ছে।

যারা এই পরিবর্তনগুলোর সাথে তাল মিলাতে না পারে তারা অনেক পিছিয়ে পড়ে। অনেকে ঝরেও যায়। যেমন, Android প্রযুক্তিকে গ্রহণ না করার কারনে Nokia হারিয়ে গেছে। তবে আমরা নিশ্চয় হারিয়ে যেতে চাই না।

- আতিকুর রহমান

(১৯.০২.২০২৪)