বর্তমান এইচএসসি ব্যাচ-২০২০ জন্মলগ্ন থেকেই বিড়ম্বনার শিকার হয়ে আসছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় নতুন নিয়ম। তারপর জেএসসি পরীক্ষায় হরতালের কারণে পরীক্ষা বিকালে দিতে হল। এসএসসি পরীক্ষায় ৭ টা সৃজনশীল শুরু হল। সর্বশেষ এইচএসসি পরীক্ষায় আঘাত হানল প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের নামের সাথে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে অটো পাশের ট্যাগ। আশেপাশের মানুষদের দ্বারা ভুগছে তারা অটোপাশ বিড়ম্বনায়


সেই সাথে চলছে মাননীয় শিক্ষাবিদদের সিদ্ধান্ত পাল্টানোর খেলা। এইচ এস সি পরীক্ষা নিয়ে কত নাটক চলল তাতো সবাই উপভোগ করেছেই। দুদিন পরপর এভাবে সিদ্ধান্ত পাল্টানো ১৩ লক্ষ শিক্ষার্থীর জীবন ও ক্যারিয়ারের ছন্দপতন ঘটানোর জন্য যথেষ্ট। এখন চলছে এডমিশন টেস্ট নিয়ে বিড়ম্বনা।



দেশে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভোগান্তি কম হবে ও অর্থ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি করোনা মহামারির সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা সহজতর হবে।তবে যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ও বিজ্ঞান থেকে বিভাগ পরিবর্তনে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য যে নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছে তা পাল্টানো নাহয় তাহলে অনেক শিক্ষার্থী ক্ষতির সম্মুখীন হবে। নয়তো ২০০৩ এইচ এস সি ব্যাচের মত ২০২০ ব্যাচও তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নীতিনির্ধারকগণের করা ভুলের মাশুল গুণতে বাধ্য হবে কড়ায়গণ্ডায়।


কোনো দেশে যখন শিক্ষানীতি নতুন করে প্রণয়ন করা হয় তখন তার বিস্তারিত কয়েক বছর আগেই জানিয়ে দিতে হয়। যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এটার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে অনায়াসে। যেমনটা আমরা দেখেছি কিছুদিন আগে দেশে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছে যা কয়েক বছর আগেই সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।


গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার এই নতুন মানবন্টনের নিয়মের কথাও আগেই জানিয়ে দেয়া উচিত ছিল।তাছাড়া যদি প্রতি বিভাগের মানবন্টনের কথা যদি এইচ এস সি পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণার পরপর জানিয়ে দেয়া হত তাহলেও শিক্ষার্থীরা তাদের লেখা-পড়া কভার করতে পারত। 


বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে বেশী বিষয় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে অন্যান্য গ্রুপের তুলনায়। যেখানে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীদেরও এত বিষয়ে পড়তে হয় না। তাও আবার শেষ মূহুর্তে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে এতগুলো বিষয় চাপিয়ে দেয়াটা বেমানান।


তাছাড়া এখন হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ‍বিভাগ পরিবর্তন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে কোচিং করছে। তাদের মধ্যে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কম নয়। তাছাড়া করোনার ভয়ানক ছোবলে অনেক মধ্যবিত্ত/উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক অবস্থাও শোচনীয় পর্যায়ে। অনেকের এই মূহুর্তে নতুন করে বিজ্ঞান বিভাগের কোচিং এ ভর্তি হওয়ার পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তাই এরকম হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নকে অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আবদ্ধ করা কি অনুচিত নয়?


লেখাটি ক্যাম্পাসটুডে পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছিল।