kobita


প্রমত্ত পদ্মার থৈ থৈ করা অথৈ জলরাশি আমি দেখেছি।

দেখেছি শুকিয়ে স্থানে স্থানে ৩১ টি চর জেগে উঠা পদ্মাও! 

.

পদ্মা-মেঘনার মোহনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পরা ইলিশ আমি দেখেছি।

দেখেছি উত্তাল ঢেউয়ের কবলে নদী ভাঙ্গনের তাণ্ডবলীলা!

.

ভরা বর্ষায় যমুনা পাড়ি দেয়ার দুঃসাহসিক অভিযানে নামা মাঝির উদ্বিগ্ন চোখ আমি দেখেছি।

দেখেছি যমুনা সেতুর উপর দিয়ে নিশ্চিন্তে বাস চালানো ড্রাইভারের ভাবলেশহীন নির্লিপ্ত চোখও!

.

দেশকে পানিতে তলিয়ে বন্যার জন্ম দেয়া তিস্তার ভয়ংকর রূপ আমি দেখেছি।

বন্যা শেষে পলি মাটির উর্বরতায় হাসতে দেখেছি খেঁটে খাওয়া কৃষককে!

.

কালবৈশাখী ঝড়ে ছোট্ট নলখাগড়া গাছকে সটান দাঁড়িয়ে থাকতে আমি দেখেছি।

ঝড়ের সাথে যুঝতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়তে দেখেছি প্রপিতামহের আমলের বিরাট বট বৃক্ষকে!

.

বিলাসী জীবনের আশায় মাতৃভূমিকে ত্যাগ করা মেধাবীদের আমি দেখেছি।

দেখেছি ক্যামব্রিজের চাকরি ছেড়ে দেশের টানে চলে আসা জে.এন. ইসলামকে!

.

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে ঘর্মাক্ত গায়ে ফসল ফলানো হত-দরিদ্র কৃষককে আমি দেখেছি।

ফ্যান-এসির ঠাণ্ডা বাতাসে বসে বসে সেই ফসল বিক্রি করতে দেখেছি ব্যবসায়ীদের।

.

জ্যাকেটের উপর শাল মুড়ি দিয়ে হেঁটে চলা কোটিপতি ভদ্রলোককে আমি দেখেছি।

কনকনে ঠাণ্ডায় কোটরাগত চোখে ফুটপাতে বসে সাহায্য চাইতে দেখেছি অসহায় বুড়িকে!

.

এলাকার প্রচণ্ড শক্তিধর অপরাজেয় কুস্তিগির রুস্তমকে আমি দেখেছি।

অতিক্ষুদ্র ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেখেছি তারই অসহায় আত্মসমর্পণ!

.

স্থানে স্থানে হুংকার দিয়ে বনকে হুংকারময় করে তোলা বাঘকে আমি দেখেছি।

হুংকারের ঝংকার তোলা সেই বাঘকেই ধীরে ধীরে বিড়াল হয়ে যেতেও দেখছি!


~ আতিকুর রহমান

(নির্মলেন্দু গুণের মত ছন্দ-হীন ভাবে লেখার ছোট্ট প্রচেষ্টা) 

(১৩ এপ্রিল, ২০২১)